আমেরিকা , মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫ , ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাগিনাউ ব্যাংকে জাল চেক ঘিরে জিম্মি পরিস্থিতি, পুলিশের গুলিতে মৃত্যু মিশিগানে ড্রাগের অন্ধকার জগতে কারফেন্টানিল নামক নীরব ঘাতক পশ্চিম মিশিগানে ছোট বিমান দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত পূর্ব ডেট্রয়েটের শিল্প কারখানায় আগুন : নিয়ন্ত্রণে এনেছে দমকল বিভাগ ডেট্রয়েটে বন্দুক সহিংসতা অব্যাহত : কিশোর নিহত, বোন গুরুতর আহত মেট্রো ডেট্রয়েটে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা আজ পন্টিয়াকে শিশু নির্যাতনের ভয়াবহ ঘটনা : পিতা কারাগারে পন্টিয়াকে গাড়ি চুরির অভিযোগে ১২ বছর বয়সী এক কিশোর গ্রেপ্তার ডেট্রয়েটে ইন্টারস্টেট ৯৪-এ  দুটি গাড়ির  সংঘর্ষে যুবক নিহত একই রশিতে হাত, হ্যামট্রাম্যাক রথে মানুষের মেলবন্ধন মুরাদনগরে ধর্ষণ মামলার মূল আসামি ফজর আলী রাজধানী থেকে গ্রেফতার ডেট্রয়েটের আকাশ থেকে ডলারের বৃষ্টি ডেট্রয়েটে গুলির ঘটনায় ৪ বছর বয়সী শিশুসহ দুইজন নিহত মেট্রো ডেট্রয়েটে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে এশিয়ান-হিস্পানিক প্রভাব ডেট্রয়েটের কিছু এলাকায় বিবর্ণ জল, সমাধানে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ ওয়েইন স্টেট ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে মামলা ভ্যান বুরেন টাউনশিপে নির্বিচারে গুলি, মাতাল অবস্থায় এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার গরমে ঘাম, খরচে চাপ—তবু কাল জমবে জোব্বি নুনার উৎসব একাত্তরের ইয়াহিয়ার পথেই চলছে আজকের অবৈধ সরকার ডেট্রয়েট নদী থেকে ভাসমান মৃতদেহ উদ্ধার

আজ চৈত্র সংক্রান্তি : বছরের শেষ দিন 

  • আপলোড সময় : ১৩-০৪-২০২৫ ১২:৪২:১১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৩-০৪-২০২৫ ১২:৪২:১১ পূর্বাহ্ন
আজ চৈত্র সংক্রান্তি : বছরের শেষ দিন 
ঢাকা, ১৩ এপ্রিল : আজ চৈত্র সংক্রান্তি। বাংলা বছরের শেষদিন। জীর্ণ, পুরণো, কুসংস্কার ও ধর্মান্ধ শক্তি ধুয়ে ধুয়ে মুছে যাক; বিদায়ী সূর্যের কাছে এই প্রণতি জানাবে বাঙ্গালি জাতি। বাংলা বছরের শেষ দিন হওয়ায় চৈত্র মাসের শেষ এ দিনটেকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। আগামীকাল বৈশাখের প্রথম দিন আসবে নতুন দিনের বারতা নিয়ে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে উদগ্রীব গোটা  বাঙ্গালি।
সংক্রান্তি শব্দটি বাংলায় হুবহু এসেছে সংস্কৃত সংক্রান্তি থেকে। এর অর্থ আকাশে পরিক্রমণের পথে এক রাশিচক্র থেকে অন্য রাশিচক্রে সূর্যের আবর্তন। এর মধ্য দিয়েই শুরু হয় নতুন একটি সৌরবছর। দার্শনিক এবং সাংস্কৃতিক উভয় প্রেক্ষাপটেই অসীম তাৎপর্য বহন করে চৈত্র সংক্রান্তি, কেননা এ দিনের মধ্য দিয়েই পূর্ণতায় উপনীত হয় ঋতুচক্রের আবর্তন, শুরু হয় ঋতুর আবাহন। উপমহাদেশের সনাতন প্রথা অনুসারী মানুষেরা এই দিনটিকে খুবই পুণ্যের দিন বলে মনে করে। সনাতন পঞ্জিকা মতে দিনটিকে গণ্য করা হয় মহাবিষুব সংক্রান্তি। এছাড়াও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চৈত্র মাস জুড়ে উৎসবের মধ্যে সূর্যের কৃপা প্রার্থনা করে। কেননা সূর্য তার রুদ্ররূপে প্রতিভাত। তাই চৈত্র সংক্রান্তিতে নানা উপাচারে নৈবদ্য দিয়ে তাকে তুষ্ট করে তারা। রেওয়াজ অনুযায়ী এই দিনটিই সারা বছরের খরিদ্দারদের কাছে বকেয়া টাকা তোলার শুভদিন ভাবা হয়। চৈত্রসংক্রান্তির সবচেয়ে বড় আয়োজন চড়ক পূজা। চৈত্র মাস জুড়ে সন্ন্যাসীরা উপবাস, ভিক্ষান্নভোজন প্রভৃতি নিয়ম পালন করেন। সংক্রান্তির দিন তারা শূলফোঁড়া, বাণফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়কগাছে ঝোলে। আগুনের ওপর দিয়ে হাঁটে। শারীরিক কসরত দেখতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসে জড়ো হয় চড়কমেলা-গাজনের মেলায়। 
এদিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এ দিনে পালন করে বৈসাবি উৎসব। নানা আয়োজনে চৈত্রসংক্রান্তির পার্বণ আবার ঠিক একই সঙ্গে দুয়ারে কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। মেলার সঙ্গে বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক ও লৌকিক দেবতার নাম সম্পৃক্ত। যেমন, শিবের গাজন, ধর্মের গাজন, নীলের গাজন ইত্যাদি। তবে চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনে এখন নতুন নতুন উপাদান অনুষঙ্গ যুক্ত হচ্ছে।
চৈত্র সংক্রান্তির মেলা ও নানা পার্বন মনে করিয়ে দেয় নতুন বছর দোরগোড়ায়। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে লোকমেলা গ্রাম-গঞ্জেই বেশী হয়। গান-বাজনা, মেলা, নাগরদোলা, প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজনে লোকজ সংস্কৃতির নানা সম্ভার ওঠে আসে এই দিনে। কালের বিবর্তনে চৈত্র সংক্রান্তির গুরুত্ব ও উদযাপন এখন অনেকটা ম্লান। নাগরিক সভ্যতার ডামাডোলে নগরীতে এর আবেদন নেই বললেই চলে। তারপরও কোনো কোনো গ্রামে ও শহরে কিছু কিছু সংগঠন ঐতিহ্যকে লালন করে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 
পুরনো বছরের সকল লেনদেন ঘুচিয়ে নতুন বছরের হালখাতা খুলে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ধোয়ামোছা, নতুন ব্যবহার্য সামগ্রী কেনা, পুরনো দেনা পাওনা মিটিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ব্যস্ত তারাও। হালখাতায় সবাই যে টাকা পরিশোধ করতে পারেন তা নয়। মূলত টাকা দিতে পারুক আর নাই পারুক বছরের শুরুর দিনে ক্রেতা-বিক্রেতাকে একত্রে বসে মিষ্টিমুখ করাই হচ্ছে হালখাতা খোলার উদ্দেশ্য। 
নানা আয়োজনে আজ যখন চৈত্র সংক্রান্তির পার্বন, তখন একই সঙ্গে দুয়ারে কড়া নাড়ছে সর্বজনীন উৎসবের নববর্ষ পহেলা বৈশাখ। কাল শনিবার রাত পোহালেই নববর্ষ উৎসবে মুখর হয়ে উঠবে বাঙ্গালি জাতি। নববর্ষের আয়োজনে ব্যস্ত উৎসব প্রেমীরা। সব প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। কথিত আছে, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্র সংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় উৎসব।
চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে থাকছে নানা আয়োজন। দুটি উৎসব ঘিরে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। এ কর্মসূচি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হবে। জানা গেছে, চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষ উপলক্ষে শনিবার (১২ এপ্রিল) দেশব্যাপী ১২টি অঞ্চলে সাধুমেলার আয়োজন করা হয়। একই দিন শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের অংশগ্রহণে পালিত হয় ফাগুয়া উৎসব।
আজ ও আগামীকাল (১৩ ও ১৪ এপ্রিল) নবপ্রাণ আন্দোলনের আয়োজনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। আজ বিকাল ৩টায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে ব্যান্ড শো। পারফর্ম করবে এফ মাইনর (গারো ব্যান্ড), ইনভোকেশন (চাকমা ব্যান্ড), ইমাং (ত্রিপুরা ব্যান্ড), চিম্বুক (মারমা ব্যান্ড), ইউনিটি (খাসিয়া ব্যান্ড) এবং ওয়ারফেজ, দলছুট, এভোয়েড রাফা, লালন, ভাইকিংস, স্টন ফ্রি-সহ আরও অনেকে।
পহেলা বৈশাখের দিন (১৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে ছায়ানটের আয়োজনে ঢাকার রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। একইদিন সকাল ৬টায় ঢাকার রবীন্দ্র সরোবরে সুরের ধারার আয়োজনে হবে পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
এদিন সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে বাঙালিসহ পাহাড় ও সমতলের ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সন্ধ্যায় চীনা কারিগরি দলের পরিবেশনায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ড্রোন শো ও বিকালে বৈশাখী ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। 
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, এ বছর পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় প্রথমবারের মতো বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীসহ প্রায় দুই শতাধিক ব্যান্ড মিউজিশিয়ান অংশগ্রহণ করবে। ব্যান্ড মিউজিশিয়ানরা ‍পৃথিবীর শান্তি কামনায়- বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্মিলিতভাবে একটি গান গাইবে। এই শোভাযাত্রায় ঢাকা এবং ঢাকার আশেপাশের সব মিউজিশিয়ানকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষের দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে পূর্বে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি, সেটা এবার করা হয়েছে। কারণ উৎসবটা বাংলাদেশের, তাই সবার অন্তর্ভুক্তি থাকতে হবে।
এবার দেশের সব মাদ্রাসায় দুই দিনব্যাপী বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর। বুধবার (৯ এপ্রিল) এক অফিস আদেশে, চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ এবং আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উপলক্ষে সব মাদ্রাসায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও সাড়ম্বরে এ উৎসব পালন করতে বলা হয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
ফ্ল্যাক্স এন গেইট ডেট্রয়েটে পশ্চিমা থিমে জমকালো ওপেন হাউস

ফ্ল্যাক্স এন গেইট ডেট্রয়েটে পশ্চিমা থিমে জমকালো ওপেন হাউস